অনুপ্রেরণা

প্রচারের আলোয় স্বপ্ন

নাচ দেখে জীতেশ সবসময়ে মুগ্ধ হয়ে যেত| স্বাভাবিকভাবে পেশাদারদের মতন সে নাচের তাল এবং অনুশীলনের প্রতি ঝুঁকে পড়েছিল| সেইজন্যে, সে যখন বলেছিল যে বড় হয়ে সে একজন পেশাদার নর্তক হতে চায়, তাতে আমরা সবাই খুব খুশী হয়েছিলাম| আমরা চেয়েছিলাম সে তার স্বপ্নপূরণ করুক এবং বিশাল উচ্চতায় পৌঁছাক|

একদিন যখন সে ক্লাসে যেতে অস্বীকার করল আমরা বুঝলাম যে একটা কিছু গন্ডগোল হয়েছে| আমরা বুঝতে পারছিলাম না কেন সে ক্লাস করতে চাইছে না, এবং তার সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করেছিলাম| কিন্তু সে আমাদের কোন কারণ বলছিল না, আর খালি বলছিল যে সে আর নাচতে চায় না| অবশেষে, অনেক করে খোশামোদের পর সে তার আসল কারণটি জানালো| সে ক্লাসে যেতে চায় না তার কারণ সে লক্ষ্য করেছে যে কোন নাচের মাঝে তার শ্বাসগ্রহণ করা কষ্টকর হয়ে পড়ছে|

জীতেশ তার স্বপ্নপূরণ করুক সেই সংকল্পে এখনও স্থির থেকে, আমরা ওকে নিয়ে ডাক্তারের কাছে গেলাম| তখন ডাক্তার আমাদের এমন খবর দিলেন, যা আমাদের সব স্বপ্ন ভেঙ্গে মাটিতে মিশিয়ে দিল - জীতেশের হাঁপানি আছে|

প্রথম তো আমরা সেটা বিশ্বাস করিনি| কিভাবে তা হতে পারে? সে কি এমন করেছে? তারই কেন? অনেক লোকই তাদের মতামত দিতে লাগল| বিভিন্ন চিকিৎসা| আমরা উদ্বিগ্ন হতে থাকলাম যে সে আবার স্বাভাবিকভাবে কাজ করতে, একা একা নাচতে পারবে কি না, সেই ভেবে|

কিন্তু অবশেষে, ইনহেলার আমাদের উদ্ধার করল| জীতেশ তার ইনহেলার এর চিকিৎসা নিতে শুরু করল এবং যেসব জিনিস তার হাঁপানির কারণ হতে পারে, সেগুলি এড়িয়ে চলার ব্যাপারে খুব সতর্ক হয়ে গেল| ইনহেলার, ডাক্তারের সঙ্গে নিয়মিত সাক্ষাৎ এবং পরীক্ষা করানো এবং জীতেশের ধৈর্যশীল অধ্যাবসায়, তার হাঁপানিকে, একধাপ একধাপ করে নিয়ন্ত্রণে আনতে সাহায্য করল|

বর্তমানে, প্রভূত পরিমাণে নাচ করা সমেত, জীতেশ আর যা যা চায় তাই সে করতে পারে| কেউই বুঝতে পারে না যে তার একটা সমস্যা আছে| এমনকী স্কুলের বার্ষিক অনুষ্ঠানেও সে অংশ নিয়েছে|  

এটা সেরকম হয়েছে যেন আমরা ভুলেই গেছি যে জীতেশের হাঁপানি আছে|

Please Select Your Preferred Language